জাতীয় খরা সম্মেলনে ১৯ দফা দাবি ঘোষণা

Rajshahi_Drought_Conference-2-1.jpg

জাতীয় খরা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য করেন সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধীর গতিতে প্রভাব ফেলে বিধায় খরার উপর তেমন গুরুত্ব আরোপ করা হয় না। ফলে ধীরে ধীরে বরেন্দ্র অঞ্চলের আবহাওয়া চরম রূপ ধারণ করেছে। এ অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় সমন্বিত কর্মসূচি নেয়া অতীব জরুরি। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা অনুসারে ২০৫০ সালকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে গবেষণার উপর ভিত্তিতে কাজ করলে এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীবন-জীবিকা রক্ষা করা যাবে।

শনিবার জাতীয় খরা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের রূপটা কি হবে সেটা নির্ভর করছে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলোকে আমরা কিভাবে সমাধান করবো তার উপর। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পুরো বাংলাদেশ জুড়েই আছে। জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে আমাদের জন্য অস্তিত্ব সংকট। খরার পরিণতি ভয়াবহ। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমাদের কৌশলপত্র এবং কর্মপরিকল্পনায় বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

সম্মেলনে অতিথি হিশেবে উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী পার্লামেন্টারি ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাহিম রাজ্জাক, সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শাহ আজম শান্তনু, একশনএইড-বাংলাদেশের দেশীয় পরিচালক ফারাহ কবির, ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অক্সফাম বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ন কবীর এবং খানি-বাংলাদেশের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম সিদ্দিক, আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন, সাংবাদিক গোরাঙ্গ নন্দী, এনজিও ফোরাম অন এডিবি’র নির্বাহী পরিচালক রায়ান হোসাইন, ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী, পরিবর্তনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদ ইবনে ওবায়েদ রিপন, প্রাণ-এর নির্বাহী পরিচালক নূরুল আলম মাসুদ। সঞ্চালনা করেন একশনএইড-এর ডেপুটি ম্যানেজার অমিত রঞ্জন দে।

সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এএনকে নোমান, ঢাকা বিম্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান, সিপিআরডি’র নির্বাহী পরিচালক মো: শামসুদ্দোহা, অক্সফামের হেড অব ক্লাইমেট জাস্টিস -এর ড. মো ইমরান হাসান। অনলাইনে সংহতি বক্তব্য জানান জাতিসংঘের খরা ও মরুময়তা বিষয়ক আন্তসরকারি প্যানেল-এর সদস্য হেমন্ত উইথানাগে।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এদেশের কৃষিকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কৃষির কাজে ভূপৃষ্ঠের পানি ব্যবহার করতে হবে। তৃণমূলের মানুষের সমস্যার কথা শুনতে হবে। কৃষককে বাঁচাতে নীতি গ্রহণ করতে হবে। বন্যা কবলিত এলাকার পানিকে খরা প্রবণ এলাকায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে জাতীয় খরা সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি সাবিত্রী সরেন। ঘোষণাপত্রে খরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কমানোর জন্য গবেষণা কার্যক্রমে প্রণোদনা প্রদান, সমতলের আদিবাসীদের অধিকার রক্ষাসহ ১৯ দফা দাবি জানানো হয়।

পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (প্রান), ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পরিবর্তন-রাজশাহী, একশনএইড, বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি), উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ (সিইপিআর), কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, এনজিও ফোরাম অন এডিবি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস্ সোসাইটি (এসআরএস) এবং দ্য আর্থ সোসাইটি যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top