প্রশাসন একাডেমির জন্য বনভূমি বরাদ্দ বাতিলের দাবি

prothomalo-bangla_2021-09_bdc53f4d-1aae-4388-ac9f-edc16e3707c5_1.jpg

অন্যচোখে রিপোর্ট: কক্সবাজারে প্রশাসন একাডেমি নির্মাণের নামে ৭০০ একর বনভূমি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেওয়ার প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন। ঝিলংজা মৌজার পরিবেশ সংবেদনশীল এই বনভূমি ধ্বংসের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিব, পরিবেশ ও বনসচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে সংগঠনগুলো।

আজ রোববার বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বেলা ছাড়া অন্য সংগঠনগুলো হলো বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), নিজেরা করি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, আইনও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।

সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বরের এক চিঠির মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার ঝিলংজা মৌজার ৭০০ একর পাহাড়ি বনভূমি খাস ও অকৃষি খাস জমি দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রতিষ্ঠার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্তের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পরে ভূমি মন্ত্রণালয় এ বছরের ৩ জুন বিএস খতিয়ানের দাগ দুটি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত প্রদানের কার্যক্রম সম্পাদন পূর্বক মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করে। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের কোনো চিঠিতেই ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বন বিভাগের আপত্তির কথা উল্লেখ করা হয়নি। এখানে বনভূমি ও রক্ষিত ছড়া থাকার পাশাপাশি জায়গাটি যে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ঘোষিত এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তা ইচ্ছাকৃতভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত এলাকায় ১০০ একর সৃজিত বাগান থাকায় এলাকাটি জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। এই রক্ষিত বনটিতে দুর্লভ প্রজাতিসহ ৫৮ প্রজাতির বৃক্ষ আছে এবং এলাকাটি এশীয় বন্য হাতি, বানর, বন্য শূকরসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও পাখির আবাসস্থল। যেহেতু প্রস্তাবিত ভূমি বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন, তাই বন বিভাগকে পাশ কাটিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্ত গ্রহণ করতে পারবে না।

রিট মামলা ৬৩৯/২০১০–এর প্রদত্ত রায় অনুসারে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হওয়ায় কক্সবাজারের ঝিলংজা মৌজায় সব ধরনের ইজারা প্রদান এবং স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা উপেক্ষা করে দেশের প্রচলিত আইন ও আদালতের আদেশের লঙ্ঘন করে ভূমির প্রকৃতি–সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে ভূমি মন্ত্রণালয় প্রেরিত ৩ জুনের চিঠি জনস্বার্থবিরোধী, প্রশাসনিক পক্ষপাতদুষ্ট ও আইনগত কর্তৃত্ববিহীন বলে সংগঠনগুলো মনে করছে।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, প্রধান বন সংরক্ষক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক, কক্সবাজার দক্ষিণের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকেও চিঠিটি দেওয়া হয়।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top