অন্যচোখে রিপোর্ট: দুই পাশে সবুজ চায়ের বাগান। মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ছড়া। এ ছড়ার কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা বালুচরে ফুটেছে শরতের বার্তা নিয়ে আসা কাশফুল। ছড়ার পাশে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা এখন কাশফুলের শুভ্র চাদরে ছেয়ে গেছে।
কাশফুল দেখতে ও ফুলের সঙ্গে নিজেদের ছবি তুলতে নানা বয়সের মানুষ এখন ছুটে যাচ্ছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কের পাশের এই কাশফুলের বালুচরে। শহর থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে ভানুগাছ সড়কের পাশে বেলতলী–সংলগ্ন ভুড়ভুড়িয়া ছড়ার পাশে এই কাশফুলের বালুচরের অবস্থান। ভানুগাছে যাওয়ার রাস্তা ধরে খানিকটা সামনে এগোলেই মেলে কাশফুলের বালুচর। প্রতিবছর আগস্টের শেষের দিক থেকে অক্টোবরের প্রথম দিকে এ ফুল ফোটা শুরু হয়। তাই বছরের দুই মাস এখানে পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।
কাশফুলের বালুচরে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন বয়সী লোকজন এখানে এসেছেন অনিন্দ্য সুন্দর এই কাশফুল দেখতে। কেউ কাশফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন। কাশফুলের গাছগুলোর ভেতরে ঢুকে পড়ছেন অনেকেই। অনেকে আবার মুক্ত বাতাসে পুরো বালুচর ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
কাশফুল দেখতে আসা দ্বীপ দত্ত বলেন, ‘জায়গাটি অনেক সুন্দর। এ বছর বেশ কয়েকবার এখানে এসেছি। এখানে সময় কাটাতে খুবই ভালো লাগে। এই কাশফুলগুলোর সঙ্গে ছবি তুললে ছবিগুলোও অনেক সুন্দর হয়।’ ঘুরতে আসা পার্থ দেব আরও বলেন, কাশফুলগুলো জানান দেয়, দুর্গাপূজা আসছে। তাই এখানে ঘুরতে এলেই মন ভালো হয়ে যায়।
দৈনন্দিন জীবনের কর্মব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়ে উপজেলাবাসীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ বেড়াতে আসেন। শরতের ঝকঝকে আকাশের নিচে হাওয়ায় দোল খাওয়া শুভ্র কাশফুলের বালুচর আগন্তুকদের বিনোদনের এক অন্যতম মাধ্যম। যাঁরা কর্মব্যস্ত শহরে খুঁজে বেড়ান একটু নীরবতা, তাঁরা প্রিয়জনকে নিয়ে কাশফুলের বালুচরে ঘুরে আসতে পারেন।
শ্রীমঙ্গল পর্যটনসেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক এস কে দাশ সুমন জানান, শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের কাছে জায়গাটি প্রায় দুই মাসের মতো বেশ আর্কষণীয় থাকে। কিন্তু কাশফুল ঝরে পড়ার পর এ জায়গায় আর কেউ যান না। যেহেতু জায়গাটি চা–বাগান কর্তৃপক্ষের আওতাধীন, তাই তাঁরা গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে পর্যটকদের জন্য দুই মাসের জন্য একটু ছাড় দেন।
তবে এখানে বেড়াতে আসা সবাইকে কাশফুল না ছেঁড়ার অনুরোধ করেন এস কে দাশ সুমন। তিনি বলেন, ‘এ জায়গায় ময়লা–আবর্জনা ফেলবেন না। প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, তাহলে প্রকৃতিও আপনাকে ভালোবাসবে।’