অন্যচোখে রিপোর্ট: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সম্প্রতি দেখা মিলল বিরল উল্টোলেজি বানরের। স্থানীয়ভাবে এটি কেশরওয়ালা সিংহ বানর, কুলু বান্দর, ছোট লেজি বানর, উলু বান্দর প্রভৃতি নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকায় এই বানরকে ‘সংকটাপন্ন’ বলা হয়েছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে এরা সংরক্ষিত প্রাণী।
অন্য বানরের লেজ নিচের দিকে নোয়ানো থাকলেও উল্টোলেজি বানরের সোনালি রঙের লেজটি নিচের দিকে একটু উঁচু হয়ে ঝুলে থাকে। এ প্রজাতির বানর সচরাচর দেখা যায় না। তাদের গায়ের রং হালকা সোনালি থেকে বাদামি। তবে ওপরের অংশ জলপাই ও ধূসর আর নিচের দিক ধূসর সাদা। মাথার মাঝখানটা চ্যাপ্টা ও কালচে রঙের। বয়স্ক বানরের মাথায় কখনো কখনো কেশর দেখা যায়। ১৬২ থেকে ১৮৬ দিন পর স্ত্রী বানর একটি বাচ্চা দেয়। এদের গড় আয়ু ১০ থেকে ১২ বছর। এই প্রজাতির বানর গভীর সবুজ বনে বাস করে। এরা ফলমূল ও কচিপাতা খায়। দল বেঁধে হানা দেয় শস্যখেতে।
বানরের এই প্রজাতি সম্পর্কে প্রকৃতিপ্রেমী রুহুল ইসলাম বলেন, এই বানরকে ইংরেজিতে বলে Northern pig-tailed macaque। কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ছাড়াও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও রেমা-কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে এই প্রজাতির বানর দেখা যায়। পুরুষ, স্ত্রী ও বাচ্চা মিলে ২০ থেকে ২৫টি বানর দল বেঁধে বাস করে।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অতিসংকটাপন্ন উল্টোলেজি বানরের ছোট–বড় মিলিয়ে একটি দল এখানে বাস করছে। অতিবিপন্ন ও সংকটাপন্ন বলে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এদের প্রতি সতর্কতার সঙ্গে নজরদারি করছে।