আওয়াল শেখ: খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ডেওয়াতলা গ্রামের কৃষক পরমানন্দের বাড়ির উঠানেই লাগানো হয়েছে ভারতীয় কেরালা জাতের চিচিঙ্গা। তার বাগানের মাচায় এই জাতের প্রতিটি চিচিঙ্গা হয়েছে ৭ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত লম্বা।
কৃষি বিভাগ বলছে, উচ্চফলনশীল হওয়ায় জাতটি দেশে ব্যাপকভাবে চাষ করা যায় কি না সে চিন্তা করছে তারা।
কৃষক পরমানন্দ বলেন, ‘আমি সাড়ে তিন বছর ভারতের কেরালায় চাষাবাদের কাজ করেছি। সেখানে আমি কফি, গোলমরিচ, এলাচ চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ফেরার সময় কেরালা জাতের দুটি বীজ ৫০ রুপিতে কিনে আনি। বাড়িতে সেই বীজ দুটি লাগিয়ে দিই। কোনো প্রকার সার বা কীটনাশক ছাড়াই গাছ দুটি বড় হয়েছে। পরে ফলন শুরু হয়।’
এসব চিচিঙ্গা সাধারণত কিছুটা বড় হয় বলে জানান পরমানন্দ। বলেন, ‘আমার দুটি গাছে এ পর্যন্ত ২০টি চিচিঙ্গা হয়েছে। প্রত্যকটি ৭ ফুটের বেশি লম্বা ছিল। আর ওজন ছিল ৩ থেকে ৫ কেজি। এটা খেতে খুব মিষ্টি। দেশীয় জাতের থেকে স্বাদও বেশি। কেরালায় এই চিচিঙ্গা খুবই যত্ন করে চাষ করা হয়। সেখানে চিচিঙ্গার আকার আরও বড় হয়।’
কৃষক পরমানন্দ তিনটি চিচিঙ্গা পাকানোর জন্য রেখে দিয়েছেন। তা দিয়ে বীজ তৈরি করবেন বলে জানান তিনি ।
তিনি বলেন, ‘তিনটি চিচিঙ্গা থেকে প্রচুর বীজ পাওয়া যাবে। সে বীজ দিয়ে আগামী বছর আবারও চাষ করব। ভালো ফলন হলে সবার মধ্যে এই বীজ বিলিয়ে দেব।’
এই জাতের চিচিঙ্গা চাষ ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটাতে চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ।
বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশি কোনো বীজ দেশে আনতে গেলে আমাদের সরকারের অনুমতি লাগে। কেরালার জাতের চিচিঙ্গা বীজ দেশে আনার অনুমতি এখনও নেই। পরমানন্দ ভারত থেকে বীজ এনে চাষাবাদ করে ফলন পেয়েছেন, এটা ভালো দিক।’
নিজেরা না আনলেও কৃষক পরমানন্দকে বীজ তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন তাকে বীজ রাখতে পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে আমরা এই বীজ ছড়িয়ে দিতে চাই। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের এই চিচিঙ্গা চাষাবাদে উৎসাহি করতে চাই। কৃষকরা এটা গ্রহণ করলে আমরা সরকারের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য আলোচনা করব।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা কর্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এর আগেও খুলনার পাইকগাছায় এক কৃষক লম্বা চিচিঙ্গার চাষ করেছিলেন। সেই বীজ থেকে পরের বছর আবারও চিচিঙ্গা হয়েছিল। আমরা অনেক কৃষকের মাঝে বীজটি বিলিয়েছি। এখন ব্যাপকভাবে কী করে বীজটি চাষাবাদের আওতায় আনা যায় সেই চেষ্টা চলছে।’
সূত্র : নিউজবাংলা